Thu. Sep 21st, 2023

পৌরসভার কাউন্সিলার ভাতা দিয়ে চলেনা সংসার। তাই বাধ্য হয়ে টোটো চালাচ্ছেন বালুরঘাট পুরসভার ৬নং ওয়র্ডের কাউন্সিলার।

1 min read

আজকেরবার্তা, বালুরঘাট, ২৯জানুয়ারিঃ পৌরসভার কাউন্সিলার ভাতা দিয়ে চলেনা সংসার। তাই বাধ্য হয়ে টোটো চালাচ্ছেন বালুরঘাট পুরসভার ৬নং ওয়র্ডের কাউন্সিলার। আগে পুরসভার দিন মজুরির কাজ করতেন তিনি কিন্তু বিগত পুর নির্বাচনে বালুরঘাট পুরসভার ৬ নং ওয়র্ডের কাউন্সিলার পদে নিযুক্ত হন তিনি। তারপর কাজ হারান বালুরঘাট পুরসভার দিন মুজিরির। শুধু মাত্র কাউন্সিলারের ভাতা দিয়ে সংসার না চলায় টোটো চালিয়ে সংসারের দায়িত্ব পালন করছেন বালুরঘাট পুরসভার ৬ নং ওয়র্ডের কাউন্সিলার শ্যামল সাহা। যখন রাজ্য জুড়ে এক এক করে উঠে আসছে তৃণমূল পরিচালিত বিভিন্ন কাউন্সিলার থেকে একাধিক পদধিকারিদের আর্থিক দুর্নিতির ঘটনা। ঠিক তখনি টোটো চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে তৃণমূল পরিচালিত বালুরঘাট পুরসভার কাউন্সিলার শ্যামল সাহা।

শহরের ছয় নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তিনি। শাসকদলের নব্য ও আদিদের যে লড়াই দেখা যায়, শ্যামল বাবু কিন্তু আদিদের মধ্যেই পড়েন। ১৯৯৮ সালে তৃণমূলের জন্ম লগ্ন থেকেই তিনি ওই ওয়ার্ডের সভাপতি পদে রয়েছেন। মাঝে হাজার প্রতিকূলতার মাঝে শহরের অনেক আদিরা, নব্যদের চাপে নিষ্ক্রিয় হয়ে গেলেও শ্যামল বাবু কিন্তু মাটি কামড়ে পড়ে থেকেছেন। অতঃপর বিগত পুর নির্বাচনে বালুরঘাট পুরসভার ৬নং ওয়র্ডের কাউন্সিলার পদে নিযুক্ত হন তিনি।

তিনি ওই ওয়ার্ডেরই গৌড়ীয় মঠ এলাকায় নিজের বাড়িতে স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন। একমাত্র মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন। তিনি পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। তৃণমূল বোর্ড আসার পরে শ্যামল বাবুকে পুরসভায় দৈনিক মজুরিতে কাজ দেওয়া হয়েছিল। তিনি পুরসভার হয়েই ওই ইলেকট্রিকের কাজ করতেন। দলের কাজ সামলে, পেশা টিকিয়ে রাখা চাপ হচ্ছিল বলে, বাইরে ব্যক্তিগতভাবে যে কাজগুলি তিনি করতেন, সেগুলিকে ধীরে ধীরে বন্ধ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু বিপর্যয় আসে ২০২২ সালে। আচমকা দল ও দলের কর্মীরা তাকে তৃণমূলের প্রার্থী হতে জোরাজুরি শুরু করে। তিনি প্রার্থী হন এবং ওই ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। আর এই কাউন্সিলর হতেই তার পুরসভার দৈনিক মজুরিতে যে কাজ করতেন সেই কাজটি বাদ হয়ে যায়। কাউন্সিলর এর সান্মানিক ভাতা তিনি পেতে শুরু করলেও, ওই টাকায় সংসার চালানো দুষ্কর হয়ে যাচ্ছিল বলে বিকল্প কি করা যায়, সেই ভাবনা তাকে গ্রাস করে ফেলেছিল। অবশেষে তিনি টোটো চালানোর সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ওয়ার্ড এর বাসিন্দাদের সমস্যা মেটানো, পৌরসভার অফিসে গিয়ে কাজ আদায় করা সহ বিভিন্ন দৈনন্দিন কাজগুলি করতে গিয়ে টোটো কখন চালাবেন, সেই ভাবনাও আসে। শেষ পর্যন্ত তিনি সকালবেলাকেই বেছে নেন টোটো চালানোর জন্য। খুব ভোরে উঠে সকাল দশটা পর্যন্ত তিনি টোটো চালান শহর ও শহর তলীতে। যা উপার্জন হয়, তা দিয়ে বাড়ির বাজার করে দিয়েই, ফের নেমে পড়েন জনসেবার কাজে। একদিকে যেমন মানুষকে পরিষেবা দেন, অন্যদিকে পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফোটাতে সকাল করে টোটো চালান শ্যামল বাবু।

 

You may have missed

Copyright © All rights reserved. | Newsphere by AF themes.