ভাবা পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্রে সায়েন্টিফিক অফিসার হতে চলেছে সিকিউরিটি গার্ডের ছেলে কৌস্তভ ঘোষ।
1 min readআজকেরবার্তা, বালুরঘাট, ২৫ জুলাইঃ লক্ষ্য ঠিক থাকলে সাফল্য আসবেই তা প্রমাণ করলো বালুরঘাটের কৌস্তভ ঘোষ। ডঃ এপিজে আব্দুল কালামকে আদর্শ মেনে সামান্য সিকিউরিটি গার্ডের ছেলে কৌস্তভ ঘোষ আজ দেশের অন্যতম সেরা পরমাণু গবেষণাকেন্দ্রের বিজ্ঞানী (নিউক্লিয়ার সায়েন্টিস্ট) হওয়ার পথে।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটের নিম্ন মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে কৌস্তভ ঘোষ। বাবা অসিত ঘোষ শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি সংস্থায় সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করেন। মা রুমু ঘোষ গৃহিণী। বাবার সামান্য আয়ের ওপর ভিত্তি করেই তাঁদের সংসার চলে। ছোট থেকে অভাবকে সঙ্গী করেই জীবন কেটেছে কৌস্তভের। মা রুমু দেবী ছোট থেকেই কৌস্তভকে সাইকেল করে স্কুলে নিয়ে যেতেন। ডঃ এপিজে আব্দুল কালামকে আদর্শ মেনে বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন দেখত সে। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ ছিল কৌস্তভের। প্রাথমিকে বালুরঘাট অভিযাত্রী বিদ্যানিকেতন এরপর বালুঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যায়ন করে কৌস্তভ।
২০১৬ সালে বালুরঘাট হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন কৌস্তভ। ২০১৮ সালে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় সফল হওয়ার পর ডিগ্রি অর্জনের জন্য বিশ্বভারতীতে ভর্তি হন। এরপর ২০২১ সাল থেকে তিনি গুয়াহাটি আইআইটিতে পড়াশোনা শুরু করেন। সেখান থেকেই তিনি ভাবা পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্রে নিয়োগের পরীক্ষায় বসেন।
ইতিমধ্যেই ভাবা পারমাণবিক গবেষণা সংস্থার (বার্ক) লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন কৌস্তভ। চলতি মাসেই তিনি দক্ষিণ ভারতের ইন্দিরা গান্ধি রিসার্চ সেন্টারে জুনিয়র নিউক্লিয়ার সায়েন্টিস্ট পদে এক বছরের প্রশিক্ষণ নিতে যাচ্ছেন। সম্ভবত উত্তরবঙ্গ থেকে একমাত্র নিউক্লিয়ার সায়েন্টিস্টের সুযোগ পেয়েছে কৌস্তভ। তিনি নিউক্লিয়ার ফুয়েল সাইকেলের উপর কাজ করবেন। এক বছর এই প্রশিক্ষণের পরেই তাঁকে সায়েন্টিফিক অফিসার হিসেবে নিয়োগের প্রস্তাব দেবে বার্ক।
ডঃ এপিজে আব্দুল কালামকে আইডল মেনে আজ সাফল্যের শিখরে পৌঁছোলেও শুরুটা মোটেও সহজ ছিল না কৌস্তভের। সে জানায়, ছোট থেকেই তার একটা লক্ষ্য ছিল। তবে সারাদিন পড়াশোনা কোন নির্দিষ্ট সময় ছিল না। দিনে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা পড়াশোনা করতো। বোম্বেতে গিয়ে সে পরীক্ষা দিয়ে এসেছে এবং পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ায় তাকে এক বছর
প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। সায়েন্টিফিক অফিসার হিসেবে নিয়োগের প্রস্তাব পেয়ে সে খুশি।
মা রুমু ঘোষ বলেন, ‘অনেক পরিশ্রমের ফল পেয়েছে। যতটা পেরেছি ওর পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। খুব কষ্টে চলতে হয়েছে আমাদের। ওর সাফল্যে ভালো লাগছে।’