হাসপাতালে যাওয়ার পথে টোটোর চাকায় কোপ বনধ সমর্থকদের।
1 min readআজকেরবার্তা, বালুরঘাট, ২২ মে: হাসপাতালে যাওয়ার পথে টোটোর চাকায় কোপ বনধ সমর্থকদের। টোটো চালকের কথা না শুনে রামদা কুড়াল ইত্যাদি অস্ত্র দিয়ে টোটোর চাকায় কোপ মেরে চাকা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বনধ সমর্থকদের বিরুদ্ধে। ঘটনায় উতপ্ত জনতা পাল্টা চড়াও হয় বনধ সমর্থকদের উপর। ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। উত্তপ্ত জনতা ও বনধ সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষর সৃষ্ট হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বালুরঘাট থানার পুলিশ। পুলিশ এসে ৩ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের ডাকা ১২ ঘন্টার বাংলা বনধের জেরে বন্ধ যান চলাচল। বনধের জেরে বন্ধ এম্বুলেন্স থেকে শুরু করে সমস্ত বেসরকারি যান চলাচল। এমত অবস্থায় টোটো নিয়ে বালুরঘাট শহরতলী এলাকা থেকে একজন বালুরঘাট সদর হাসপাতালের দিকে যায় তার পরিজনকে হাসপাতাল থেকে আনতে। হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীকে বাড়ি নিয়ে আসতে যাওয়ার পথে টোটোর চাকায় কোপ মেরে বনধ সমর্থকেরা। বালুরঘাট শহরের সাধনা মোড় এলাকায় বনধের সমর্থনে পিকেটিং করতে থাকা আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের কিছু সদস্য টোটোটিকে আটকে দেয়।
টোটো চালক ও আরোহীর অভিযোগ, বারংবার আবেদন করার পরও বনধ সমর্থকেরা কোন কথা না শুনে টোটোর চাকায় রামদা কুড়াল দিয়ে কোপ দেয়৷ ঘটনায় টোটোর দু’টি টায়ার ফেটে যায়। টোটো চালক আরো বলেন, টোটোর টায়ারে কোপ মারার প্রতিবাদ করার আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের ডাকা বনধের সমর্থকেরা টোটো চালক ও আরোহীকে মারধর করে।
ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। টোটো চালক ও আরোহীকে বনধ সমর্থকদের হাতে আহত হতে দেখে স্থানীয় দোকানদারেরা ছুটে আসে তাদের উদ্ধার করতে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পরবর্তীতে বনধ সমর্থকেরা তাদের আগ্নেঅস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে। ঘটনায় স্থানীয় দোকানদারেরা চড়াও হয় বনধ সমর্থকদের উপর। উভয় পক্ষের হাতাহাতিতে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এলাকায়।
ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বালুরঘাট থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। ডিএসপি সোমনাথ ঝাঁ’র নেতৃত্বে র্যাপ, সিভিক ভলেন্টিয়ার সহ পুলিশ বাহিনী পরিস্থিতি সামাল দিতে উদ্যোগী হয়। ঘটনায় উত্তপ্ত জনতার রেশ সামাল দিতে ৩ জন আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের বনধ সমর্থককে আটক করে পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায় পুলিশ।
অপর দিকে উত্তপ্ত ব্যবসায়ীরা শহরের রাস্তায় বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। বালুরঘাট শহরের সাধনা মোড়ের রাস্তায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করে শহরের ব্যবসায়ীরা। যে সমস্ত বনধ সমর্থকেরা কোন কারণ ছাড়াই টোটোর চাকায় কোপ দিয়েছে তাদের শাস্তির দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ দেখায় তারা। ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে এই বনধের সমর্থকদের এমন আচারণের প্রতিবাদ জানানো হয়৷ তাদের দাবি পুলিশ প্রশাসন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে আগামী দিনে ব্যবসায়ী সমিতি বনধ সমর্থকদের এরুপ আচারণের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
যদিও বনধের সমর্থন করা আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের তিনজনকে ইতিমধ্যেই আটক করেছে বালুরঘাট থানার পুলিশ। ডিএসপি সোমনাথ ঝাঁ জানান, আপাতত ৩ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে এলাকায় লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরার ফূটেজ চেক করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সুয়োমটো মামলা ঋজু করা হবে।
ঘটনায়, আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের দক্ষিন দিনাজপুর জেলা পারগনা বিক্রয় মুর্মু জানান, আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের ডাকা বনধ সফল হয়েছে। সমস্ত ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে যানবাহন চালক ও সাধারণ মানুষকে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি বালুরঘাট শহরের সাধনামোড়ে ঘটে যাওয়া বিক্ষিপ্ত ঘটনার প্রসঙ্গে তিনি জানান, এটা খুবই নিন্দেনিয় ঘটনা। এইরুপ ঘটনা কখনোই বরদাস্ত করবেনা আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযান। তিনি আরো বলেন, প্রশাসন যেন এই ঘটনার সম্পূর্ণ তদন্ত করে। যারা এই কাজ করেছে তারা সকলেই বিরোধী বলে দাবি করেন বিক্রম মুর্মু।
আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের দক্ষিন দিনাজপুর জেলা পারগনা বিক্রয় মুর্মু জানান, আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের শহরের ডাললোপ মোরে কোন কর্মসূচি ছিলোনা। আমাদের যা কর্মসূচি ছিল তা হিলি মোড়ে ছিল। যারা ডাললোপ মোড়ে টোটোর চাকায় কোপ মেরেছে তারা আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের সদস্য নয় বলেও দাবী করেন তিনি।