পাকা রাস্তায় চলছে ধান ও খড় শোকানোর কাজ। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। নির্বাক প্রশাসন। ।
1 min read
আজকেরবার্তা, বংশিহারী, ১৭মেঃ আবারো পাকা রাস্তা জুড়ে দেখা মিলছে ধান ও খড়ের। কৃষকেরা শুকোতে দিচ্ছে পাকা রাস্তা জুড়ে ধান ও খড়। যদিও দুর্ঘটনার প্রবণতা বৃদ্ধির কারণে প্রশাসনের তরফ থেকে বারংবার মানা করা হয়েছিল পাকা রাস্তায় ধান শুকানোর জন্য। কিন্তু এখন আর দেখা নেই প্রশাসনের। তাই আবারও রমরমিয়ে উঠছে রাস্তায় ধান ও খর শুকানো।
এমনই চিত্র নজরে আসলো দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বুনিয়াদপুরে। বুনিয়াদপুর এলাকার সরাইহাট মালম থেকে বদলপুর পর্যন্ত পাকা রাস্তায় শুকানো হচ্ছে নতুন বোরো ধান ও খড়। পাকা রাস্তার মাঝেমধ্যেই কোথাও ধান মেলে আবার কোথাওবা খর বিছিয়ে আটকে আছে পুরো রাস্তা। এমনকি ঢেকে রাখা হয়েছে স্পিড ব্রেকার গুলিও। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে যানবাহন সহ পথ চলতি মানুষদের। সমস্ত এলাকাজুড়ে চলাচলের ক্ষেত্রেও সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বিগত ২০২০ সালে তপন থানার বিডিও ছগেল মুক্তাং তামাং করদহর রাস্তায় গাড়ি নিয়ে এইরকম ধানের খড় বিছানো রাস্তা দিয়ে যাবার পথে গাড়িটি স্লিপ করে রাস্তার ধারে একটি গাছকে সজোরে ধাক্কা মারে। তার আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাকে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসারত করা হয়, তারপর সেখানেই মৃত্যু হয় তার।
এই ভয়াবহ পথদুর্ঘটনা টি ঘটার পর কিছুদিনের জন্য নড়েচড়ে বসে ছিল প্রশাসন। কিন্তু তারপর সময়ের সাথে সাথে আবারো শিথিল হয় প্রশাসনের তৎপরতা।
ঘটনার পর প্রশাসন সেই সময় নড়ে চড়ে বসেছিল। রাস্তায় ধান অখর শুকানোর বিরোধিতায় গোটা জেলাজুড়ে করা হয়েছিল মাইকিং। প্রশাসনের নজরদারিতে কিছুটা হলেও বন্ধ হয়েছিল রাস্তায় ধান ও খড় বিছানো।
কিন্তু, দুই বছরের সেই স্মৃতি মুছে যেতে না যেতেই ফের শুরু হয়েছে রাস্তায় বোরো ধান ও খড় সুখানোর কাজ।
এই মৌসুমে বোরো ধান ও খড় শুকানোর জোর পরে চাষীদের মধ্যে। বৃষ্টি আসার আগেই কে কত তাড়াতাড়ি খড়গুলিকে শুকিয়ে শুকনো ধান গোলায় তুলবেন । এই কাজের জন্য বেছে নেওয়া হয় শহর ও গ্রামের পিচ ঢালা রাস্তাগুলোকে। আরে এই রাস্তায় ধান শুকানোর জেরে প্রায়শই দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয় ছোট-বড় যানবাহন সহ পথচারীদের।
যেভাবে রাস্তায় ধান, খড় মেলে দেওয়া হয়েছে কোন মোটরসাইকেল সহ যে কোন যানবাহন সাধারণ গতিতে থাকলেও বড় ধরনের দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে। আর বৃষ্টি হলে তো রাস্তাগুলো পিচ্ছিল হয়ে ভয়ংকর রূপ নেয়। এ বিষয়ে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকলেও মানতে নারাজ রাস্তায় ধান শুকোতে দেওয়া সাধারণমানুষেরা।
এ বিষয়ে টোটো চালক মিলন দাস বলেন, যেভাবে রাস্তায় খড় বিছিয়ে রেখেছে, কখন যে কি হয় বলা যাবে না। টোটো জোরে চালাতে পারছিনা। ব্যাটারির চার্জ তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাচ্ছে।
ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক গনেশ মাহাতো অভিযোগ করে বলেন, আমি সাধারণ গতিতেই বাইক টি চালিয়ে যাচ্ছিলাম। ধানের খড় থাকাতে সামান্য ব্রেক কসাতে ছিটকে পড়েছি। যদিও সেভাবে ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে পাকা চালক না হলে বিপদ ঘটে যেত। প্রশাসনের উচিত এ বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার।
রাস্তায় ধান মেলতে আসা বুধো সরকার কে জিজ্ঞাসা করায় তিনি জানান, আমার জানা নাই যে রাস্তায় ধান ও খড় মেলানো নিষেধ আছে। এখন থেকে আর করব না।
এ বিষয়ে বুনিয়াদপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান অখিল চন্দ্র বর্মন বলেন, ধানচাষীরা এভাবে রাস্তায় খড় বা ধান শুকাতে পারে না। এটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। কেউ এই নির্দেশ অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।