সর্বভারতীয় স্তরে ভারতীয় প্রযুক্তি বিদ্যা প্রতিষ্ঠান ( আই আই টি) এর “এম. এস. সি “র এন্ট্রান্স পরীক্ষায় ২৫১ র্যাঙ্ক করে চমক লাগালো বালুরঘাটের সীতানাথ মজুমদার।
1 min read
আজকেরবার্তা, বালুরঘাট, ১৭এপ্রিলঃ সর্বভারতীয় স্তরে ভারতীয় প্রযুক্তি বিদ্যা প্রতিষ্ঠান ( আই আই টি) এর “এম. এস. সি “র এন্ট্রান্স পরীক্ষায় ২৫১ র্যাঙ্ক করে চমক লাগালো বালুরঘাটের সীতানাথ মজুমদার। প্রবল আর্থকষ্টের মধ্য দিয়ে দিন যাপন করেও এম এস সি এন্ট্রান্স পরিক্ষার তাক লাগিয়ে দিল সীতানাথ। বালুরঘাট শহরের খাদিমপুর পাড়ায় পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সীতানাথ মজুমদার। মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক বালুরঘাটের খাদিমপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পাশ করার পর বর্তমানে সে বালুরঘাট কোয়েড কলেজের ছাত্র।
বাবা সৌরেন্দ্রনাথ মজুমদার পৌরোহিত্য করে পরিবারের খরচ চালান। তাই সংসারের হাল ধরতে এগিয়ে এসেছে সতীনাথ ও তার মা। প্রবল অর্থ কষ্টের মধ্য দিয়ে পড়াশোনা করেও সঙ্গে ছিল শুধু বড় হওয়ার অদম্য ইচ্ছা। সেই ইচ্ছা পুষে রাখতে শখ আলহ্যাদ ছেড়ে দিয়ে জীবন সংগ্রামের দারিদ্র্যের নির্মম বাস্তবতার মধ্যে পড়াশোনা চালিয়ে সফল হয়েছে সর্বভারতীয় স্তরে এই পরীক্ষায়। যা সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সীতানাথ। বালুরঘাট শহরের খাদিমপুর এলাকায় অতি সামান্য একটি গাঁথুনি ও টিনের চালের বাড়িতে বসবাস সতীনাথের। এন্ট্রান্স পরীক্ষায় ভালো ফল করার পরও দিনরাত দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে সে। সীতানাথ তার বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। তাই ছেলের এই অভাবনীয় সাফল্যের পরেও তার ভবিষ্যৎ পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় সীতানাথের বাবা – মা।
সীতানাথের মা সুমিতা মজুমদার বলেন, ‘ভালো ফল পেয়ে ছেলের খুব খুশি হওয়ার কথা। অথচ সে মন খারাপ করে বসে আছে। আর্থিক দুরবস্থার জন্য ওখানে ভর্তি হতে পারবে কি না, সেটা নিয়েই তারা চিন্তায় আছে। ভর্তি হওয়া ও থাকা-খাওয়ার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। আমাদের অভাবের সংসার তাই সরকার যদি সাহায্য করে তাহলে ছেলেটা অন্তত পড়তে পারবে বলে আর্জি তার মায়ের।
অপরদিকে সীতানাথ জানায় যে সে খাদিমপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে। বর্তমানে বালুরঘাট কলেজে অঙ্ক নিয়ে সিক্সথ সেমীস্টারের পড়ছে। তার পড়াশোনা চালিয়ে আসার পেছনে যেমন স্কুলের শিক্ষকদের কাছ থেকে সাহায্য পেয়েছে সে, তেমনি কলেজের অধ্যাপকদের কাছ থেকেও নানা ভাবে সাহায্য পেয়েছে। বর্তমানে আই আই টি তে পড়াশোনা করতে যাওয়ার জন্য সরকারি আর্থিক সহয়তার দিকে তাকিয়ে রয়েছে সীতানাথ। সাহায্য পেলে পারবে তার এতদিনের স্বপ্ন সফল করে বাবা মার মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করবে। কিন্তু তা না হলে কি করবে সে তা নিয়ে নানান দুশ্চিন্তা করছে সে।
অপরদিকে বালুরঘাট ২৪ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দীপান্বিতা সীংহ রায় জানিয়েছেন, তিনি ওর পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার সব রকম সাহায্য করবেন।
কিন্তু সবাইকে চমকে দিলেও কিভাবে তার এই সাফল্যকে ধরে রেখে তার পড়াশোনা চালিয়ে যাবে সেই নিয়ে সীতানাথ নিজে ও তার পরিবার রয়েছে ঘোর দুশ্চিন্তায়। বাধ্য হয়ে সরকারি সাহায্যের আশার দিকে তাকিয়ে বসে রয়েছে সীতানাথ ও তার পরিবার।