এনআরসি আতঙ্কে আত্মহননের সাতদিন পর রুমানা ইয়াসমিনের পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন জনপ্রতিনিধিরা।
1 min read
আজকের বার্তা, কুশমন্ডি, ১২ অক্টোবর ঃ- এনআরসি আতঙ্কেআ ত্মহননের সাতদিন পরে আত্মঘাতী রুমানা ইয়াসমিনের পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ মিঠু জোয়াদ্দার ও অন্যান্য নেতৃত্ব। গত ৫ ই অক্টোবর দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমন্ডি ব্লকের উত্তর নাইট এলাকার বাসিন্দা ৩৮ বছরের রুমানা ইয়াসমিন রাতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। পরিবারে স্বামী সহ দুই পড়ুয়া ছেলে বর্তমান। দুই ছেলের মধ্যে এক ছেলে বাইরের হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করে। এদিন এই পরিবারের পাশে এসে দাঁড়ান ও সহমর্মিতা প্রকাশ করেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের নারী ও শিশু কল্যাণ দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ মিঠু জোয়াদ্দার, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তৃনমুল নেতা রিতেশ জোয়াদ্দার, কুশমন্ডি পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ রেজ জাহির আব্বাস ছাড়াও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, উল্লেখ করা যায় গত পয়লা সেপ্টেম্বর থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্যসাথী প্রকল্পের ডিজিটাল রেশন কার্ডের নতুন নাম তোলা, ভুল সংশোধন, রেশন দোকানের স্থান পরিবর্তন সহ অন্যান্য সংশোধনের কাজ রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে ও পৌরসভা গুলিতে বিশেষ ক্যাম্প করে করা হচ্ছিল।এই ক্যাম্প গুলিতে কাজগুলি করার জন্য বহু সংখ্যক লোকের সমাগম ঘটে। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের দপ্তর থেকে ভোটার কার্ডের আপডেট, নতুন নাম তোলা ও সংশোধনের কাজের বিজ্ঞপ্তিও দেওয়া হয়। এই সময়ের মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বরা এন আর সি হওয়ার স্বপক্ষে ও বিপক্ষের তর্জায় নেমে পড়ে। এনআরসি আতঙ্কে বহু লোক তাদের কাগজপত্র নিয়ে ছোটাছুটি শুরু করে, গরমে লাইনে দাঁড়িয়ে কাজ করতে গিয়ে বেশ কয়েক জনের মৃত্যুও ঘটে এই রাজ্যে। সঠিক কাগজ না থাকায় অবসাদে কয়েকজন আত্মহত্যা করে বলেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি দাবি করছে। কুশমন্ডিতে এনআরসি আতঙ্কে আত্মঘাতী হয় রুমানা ইয়াসমিন।
যদিও পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সরকারিভাবে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানান, এনআরসি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড আপডেট করুন ও ভুল থাকলে সংশোধন করে নিন।
তবুও এনআরসি আতঙ্ক আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়ে গ্রামে-গঞ্জে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমন্ডি ব্লকের উত্তর নাইট এলাকার বাসিন্দা রুমানা ইয়াসমিন তার ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড ও আধার কার্ডের মধ্যে ভুল থাকায় বিভিন্ন জায়গায় দৌড়াদৌড়ি করেন ও উকিলেরও পরামর্শ নেন বলে দাবি করেন তার ফুফাতো ভাই মহিদুর রহমান। তিনি আরো বলেন “বিজেপি দলের সভাপতি অমিত শাহ পশ্চিমবঙ্গে এলেই এনআরসির হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। এতে লোক ভয় পেয়ে যাচ্ছে। মমতা ব্যানার্জি অবশ্য বলছেন এনআরসি নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কিন্তু আমার বোন তার কাগজপত্রে ভুল থাকায় অবসাদে আত্মঘাতী হন বলে দাবি করেন তিনি।
মৃত মহিলার ছেলে রফিক ইকবাল বলেন, একদিন আগেই মা সিনতোরা গ্রামে এক বিয়ে বাড়িতে গিয়েছিলেন সেখানে তাকে কাগজপত্রের ভুলের ব্যাপারটি বলেন। তিনি বলেন ও সব ঠিক হয়ে যাবে কিন্তু মা বিয়ে বাড়ি থেকে ফিরে এসে আত্মহত্যা করেন। তার দাবি এটা এনআরসি আতঙ্কে অবসাদে তার মা আত্মহত্যা করেছে।